ম্যাগাজিনের প্রকাশক, সম্পাদক ও লেখকদের বিরুদ্ধে মামলা-রাস্তায় বিক্ষোভ

ঢাকা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এ ধর্ম অবমাননার অভিযোগে “এথিস্ট ইন বাংলাদেশ” নামক একটি নাস্তিকতা বিষয়ক ম্যাগাজিনের প্রকাশক সেকুলার পাবলিশার্স, সম্পাদক ও সকল লেখকসহ মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৩ ই জুলাই বৃহপ ধামরাই নিবাসী রায়হান আলী সুমন নামের এক ব্যাক্তি আদালতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ পেনাল কোডের ২৯৫ ধারার অধীনে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তিনি এই মামলা দায়ের করেন। মামলার নাম্বার ২২৪/১৭।
মামলার নথি থেকে জানা যায় যে জনাব রায়হান আলী মামলার ১ নং আসামী সিদ্দিকুর রহমানের নাস্তিকতা বিষয়ে বিভিন্ন লেখালেখি সম্পর্কে পুর্ব থেকেই অবগত ছিলেন কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখিত আসামীর উক্ত ম্যাগাজিনের লেখা দেখবার পর এবং এই ম্যাগাজিনে অন্যান্য লেখকদের লেখা দেখার পর তিনি আর নিজেকে সংবরণ করতে পারেন নি যার ফলে তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। এই মামলার অন্যান্য আসামীরা হচ্ছেন আরিফুর রহমান, মোঃ তোফায়েল হোসেন, আবু তাহের মহম্মদ মোস্তফা, এনায়েতুল হুদা, সৈয়দ সানভি অনিক হোসাইন,সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন শাওন,এ বি এম মাহমুদুল হাসান, হুসাইন মহম্মদ পারভেজ, সৈয়দ মোহাম্মদ সজীব আবেদ, মুহম্মদ তামজিদ হোসাইন,হসনি মোবারক,নাঈমুল ইসলাম, রুজভেল্ট হালদার, এম ডি নুরুন নবী, রিয়ানা তৃণা, কামিকাজি,পিনাকী দেব অপু, শারমিন জান্নাত ভুট্টো এবং শাফি নেওয়াজ।
গত প্রায় কয়েকবছরে নাস্তক্যবাদী লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষকদেরকে ক্রমাগতভাবে হত্যা করা হয়েছে এই বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ জনের মত জন ব্লগারকে তাদের লেখালেখির কারণে হত্যা করা হয়েছে। এখন শুধু লেখকই নয়, প্রকাশকেরাও হচ্ছেন হামলার শিকার।
একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটলেও একটি বাদে কোনও মামলারই চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি নেই।
২০১৫ এর ৩১ শে অক্টোবর তারিখে দুটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রকাশকের উপর হামলার ঘটনায় এই প্রশ্নটিই আবারও সামনে উঠে এসেছে। দুটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকেই নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান দুটির একটি ‘শুদ্ধস্বর’, যার প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। একই দিনে রাজধানীর শাহবাগে ‘জাগৃতি’ নামের আরেকটি প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এদিকে উল্লেখিত ম্যাগাজিনের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে এই ম্যাগাজিন প্রায় গত বেশ কিছু বছর ধরেই নাস্তিক্যবাদের প্রচার ও প্রসার ঘটিয়ে যাচ্ছে। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত ম্যাগাজিনটির লেখক প্রকাশকেরা ঠিক কোথায় থাকেন কিংবা কোথায় থেকে এটি পরিচালনা করেন এর সঠিক তথ্য এখন পর্যন্ত জানা যায় নি। তবে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এই ম্যাগাজিনের কর্মীরা ও কর্তা ব্যাক্তিরা বসবাস করেন।
এদিকে এই মামলার বাদীর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে জনাব রায়হাল আলী সুমন একজন সক্রিয় হেফাজত ইসলামের কর্মী। সিলেটের আফিযা ফজিলাতুন নেসা মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পরীক্ষা সমাপ্ত করেন তিনি এবং সেখানেই হেফাজতী ইসলামীর কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এই মামলার ব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে ্তার অনাগ্র প্রকাশ করেন।